অনলাইন কোচিং ক্লাস।
মোঃ তানজিল হোসাইন।
আমার এক বন্ধু ট্যালেন্টেড আল্ট্রা প্রো ম্যাক্স! ভালো ছাত্র হিসেবে ট্যালেন্টেড ভাবলে এ বেলা বলে রাখি আপনাদের ধারণা একদম ভুল! আমার সেই বন্ধু রেজাল্ট বাজেয়াপ্ত করতে ট্যালেন্টেড! পরীক্ষায় ফেল করলে রেজাল্ট কার্ড কিভাবে চেঞ্জ করতে হয়, এ বিষয়ে ডক্টরেট কোর্স থাকলে সে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পি-এইচ.ডি করে ফেলতো! দূর্ভাগ্যের বিষয় সেই ছাত্রই এখন রেজাল্ট কার্ড চেঞ্জ করতে পারে না, কারণ স্যার লাইভে সরাসরি মা-বাবার সামনে জোরে জোরে রেজাল্ট বলে! 😂
.
দু ঘন্টা অনলাইন ক্লাস করলাম। এতোক্ষণ ক্লাস করার পর মনে হলো কি যেনো নেই! মনে হয় যেনো প্রিয় কোনো মানুষ মারা গেছে এমন অস্বস্তিকর অবস্থা! কি হলো না হলো অনেকক্ষণ ভাবলাম! পরে ঘটনাটা ধরে ফেললাম, যেই স্যারের কোচিং-এ ১ ঘন্টা ক্লাসে আধ ঘন্টাই হয় হাসি ঠাট্টা, সেই স্যার আজ পুরো এক ঘন্টা সক্রেটিসের বাবার নানা কে ছিলো ইত্যাদী অখাদ্য ইংরেজি রি অ্যারেঞ্জ পড়ালো! 😪
.
অনলাইন ক্লাস বাদ দিয়ে আমার সাথে চ্যাটিং-এ ব্যস্ত সুরাজ। হঠাৎ স্যার বললো, “সুরাজ আইনস্টাইনের রিলেটিভিটির ২য় মুলনীতিটা বলোতো!” এমন প্রশ্নের উত্তর বলার মতো ছাত্র সুরাজ নয়! আমি মেসেজ দিয়ে দিলাম, “আলোর বেগ সকল জড় মাধ্যমে একই থাকে!” সুরাজ আমার মেসেজ দেখে স্যারকে শুনিয়ে দিলো! স্যার বললো, “ভেরি গুড সুরাজ! বাহ্, পড়াশোনাতো আজকাল ভালোই করো!” নকল করার নিঞ্জা টেকনিক খাটিয়ে মহাবিজ্ঞানী হয়ে গেলো সুরাজ! 😅
.
“এই তোমরা এখনও মাল দেও না কেনো?” বেতনকে মাল বলার অভ্যাস কুদ্দুস স্যারের। কিন্তু এ অভ্যাস তার জন্য কাঁটা হয়ে গেলো। অনলাইনে ক্লাসে শুধু ছাত্র থাকে না, ছাত্রের মা-বাবাও থাকে। ‘মাল’ শব্দের মতো অশ্লীল (আদোউ অশ্লীল কিনা আমি জানি না কিন্তু মানুষ ভাবে অশ্লীল) কথা বলার অপরাধে তার কাছে কোচিং করা বাদ দিয়ে দিলো রাসেলের মা-বাবা.... 😶
.
বক্কর স্যারের হাতে ব্যান্ডেজ। কারণ তার অভ্যাস ছাত্রদের বিনা কারণেও কিল ঘুষি দেয়া। আজ অনলাইন ক্লাসে এক ছাত্রকে ঘুষি দিতে গিয়ে টিভির মনিটর ভেঙে গুরো গুরো হয়ে হাত এখন কোমায়... 🥴
.
৭ কেজি ওজন বেড়েছে আসিকের। প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে কোচিং করতে যাওয়ার অভ্যাস তার। এখন সাইকেল চালানোতো দূরের কথা, খাটে শুয়ে বসে অনলাইন ক্লাস করে আসিক! ফলাফল ৭ কেজি ওজন গেইনার.. 😷
.
- “আব্বা ৫৫ ইঞ্চি টিভি কিনতে হবে!”
- “কেনো?”
- “স্যারের হাতের লেখা খুব ছোট। অনলাইন ক্লাস চলাকালীন স্যার বোর্ডে কি লেখে আমার ছোট মোবাইলে কিছুই দেখি না।”
অনলাইন ক্লাসের হুজুগে ৫৫ ইঞ্জি টিভি বিক্রি করে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও টিভি বিক্রেতা ঘাড় মোটা হাতির মতো শরীর বিশিষ্ট রহিমের মুখে বাঁকা চাঁদের মতো হাঁসি.. 🌚
.
.
সারমর্ম : অনলাইন ক্লাসের অবদান দুইটা—
১. পড়াশোনা বেশি হয়,
২. হাঁসি ঠাট্টা কম হয়।
তাই পড়াশুনা অনলাইন ক্লাসে, সাধারণ ক্লাসের দ্বিগুণ হয়। এটা একটা ভালো দিক।
দ্বিগুণ পড়াশুনা করে যদি কেউ ২ ঘন্টা গেম খেলে, এতে মহাভারত শুদ্ধ হবে না!
ক্লাসে হাসিঠাট্টা যেটুকু টাইম হতো, ঐটুকু টাইমই এখন গেমে কাঁটুক! ক্ষতি কি?
তাই অনলাইন ক্লাস দরকার নেই, অনলাইন ক্লাসের নামে মা-বাবার সাথে প্রতারণা -এ জাতীয় আজগুবি খবর আমি পছন্দ করি না,,, আমি অনলাইন ক্লাসের সাথে ১০০% পক্ষে।
.
পড়াশোনা হোক বিনোদনের সাথে,,,,
(সমাপ্ত)