ফ্লোরিকান।
মোঃ তানজিল হোসাইন।
.
রাত ৩ টা। হঠাৎ ঘরের দরজায় কারো আওয়াজ পায় রিহান। কিছু বোঝার আগেই ড্রিল মেশিন দিয়ে ঘরের দরজার লগ ছিদ্র করে নষ্ট করে ঘরে ঢুকে ডাকাত দল! দরজার লকটি কেনার সময় রিহানকে বলা হয়েছিল এটি নাকি ডিনামাইট মারলেও ভাঙে না! সেই লক সামান্য ড্রিল মেশিন দিয়ে নষ্ট করা যায়, বিষয়টা দেখে এমন বিপদের পরিস্থিতিতেও রিহান একটু অবাক হয়!
.
ডাকাত দলকে বাঁধা দেয়ার শক্তি তার নেই জেনেও একটু উঠে সাহস দেখানোর চেষ্টা করে রিহান! কিন্তু সে তার শরীর নাড়াতে পারছে না দেখে দ্বিতীয় বারের মতো অবাক হয়! কিছুক্ষণের মধ্যেই সে ঘুমিয়ে পড়ে।
.
ঘুম ভাঙার পর আবিষ্কার করে তার চোখের সামনে একটি মনিটর! বুঝতে তার অসুবিধা হলো না সে এখন আই.সি.উ তে চিকিৎসাধীন! কেনো চিকিৎসাধীন তা বুঝতে পারে না তবে ধারণা করে ডাকাতদল তাকে অত্নাচার করেছে। ডাকাত দল কি তার হাত পা ভেঙে গুরো গুরো করে ফেলেছে? নাকি গুলি করেছে? চিন্তা ভাবনা করতে করতে আবার সে আধো আধো ঘুমিয়ে পরে। আস্তে আস্তে ঘুম পুরোপুরি কেঁটে গেলো।
.
আই.সি.ইউ রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ছেলেটি রিহানকে ঘুম থেকে উঠতে দেখে খুশি হয়। আমি জানি অনেকে ভ্রু কুঁচকে বলবে, নার্স আবার কিভাবে ছেলে হয়! এ বেলা বলে রাখি, চিকিৎসা সেবা দানে সহায়তাকারী ছেলে-মেয়ে সকলকেই নার্স বলে। মন-মানসিকতা একটু ফ্রেশ হওয়ার পর রিহান ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করে, "ডাকাত দল আমার হাত পা ভেঙে ফেলেছে?" ছেলেটি জবাব দ্যয়, "না! তোমার হাত পা খুব স্ট্রং! তোমার হাত পা কিভাবে ভাঙবে?" বলেই ছেলেটি হাসি দিতে থাকে। রিহান নিজেও হাসতে থাকে। "তাহলে কি ওরা আমাকে গুলি করেছে?" ছেলেটি বলে, "আমরা যতোদূর জেনেছি তুমি রসায়নের ছাত্র। ঘুমের মাঝেও যদি কেউ গুলি করে, নিউরন একসাথে কাজ করে তোমার ঘুম ভেঙে যেতো। অন্তত ঘুম না ভাঙলেও তুমি ব্যাথা অনুভব করতে। এটুকতো তোমার জানা উচিৎ!" রিহান নিজের প্রতি লজ্জা পায়। লজ্জা পেলেও মানুষ মুচকি মুচকি হাসে! কেনো হাসে মানুষ জানে! কিন্তু হাসিটা আর বেশিক্ষণ থাকে না। রিহান প্রশ্ন করে, "তাহলে আমি এখানে এসেছি কেনো?"
.
ছেলেটি জবাব দিলো না। সে বললো, "তুমি কাল রাতের পার আর কিছু খাওনি। এখন দুপুর তিনটা বাজে! এতোক্ষণ তোমার হুঁশ ছিলো না। কিছু খেয়ে নাও। তারপর তোমাকে সবকিছু বলবো।"
.
হালকা গরম কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে গরুর রেজালা খেতে থাকে রিহান। রিহান বলে, "চুপচাপ খাওয়ার আমার অভ্যাস নেই! তুমি ঘটনা বলতে থাকো আমি খাই!"
"তাহলে শোনো.. গতো রাতে তোমাদের বাসায় ডাকাত এসেছিলো তুমি জানো। তারপর তুমি ঘুমিয়ে পরো। শুধু তুমি নয়, তোমাদের বিল্ডিং এর প্রতি ফ্লাটের প্রায় সবাইই সে রাতে অজ্ঞান ছিলো! ডাকাত দল শুধু তোমাদের বাসায় আসেনি। পুরো বিল্ডিংয়ের ১২ টি বাসার প্রতিটিতে ডাকাতি করেছে!" রিহান থতমত হয়ে যায়। সজিব (নার্স) বলতে থাকে, "পরিকল্পনাটি খুব সহজ। প্রথমে তারা যেকোনোভাবে তোমাদের পুরো বিল্ডিংয়ের সকলকে অজ্ঞান করেছে। তোমাদের প্রত্যেকের শরীরে অ্যামিট্রিপটিনিল হাইড্রোক্লোরাইড পাওয়া গিয়েছে।"
"অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইড! সেটিতো ট্রিপটিন, এমিলিন, এই জাতীয় ঔষধ! কেউ যদি একসাথে ২৫০ মিলিগ্রাম খায়, আধ ঘন্টার মাঝেই মারা লিভার ক্যান্সার হয়ে যাবে!"
"হ্যা। ডাকাত দল তোমাদের সবাইকে অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইড খাইয়েছে। কিভাবে খেয়েছে আমরা জানি না। কিন্তু আমাদের ধারণা তোমাদের ট্যাঙ্কের পানির সাথে মেশানো হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্য গবেষণা আমাদের দায়িত্ব নয়, এই কাজের দায়িত্ব পুলিশের।"
"সবাই এখন কেমন আছে?" প্রশ্ন শুনে সজুবের মুখ শুকিয়ে যায়।
"তোমাদের বিল্ডিংএ মোট মানুষ ছিলো ৪০ জন। তাদের মাঝে সবাইতো ট্যাঙ্কের পানি খায়নি! অনেকে জেগে ছিলো। আবার অনেকে ঘুমের ঔষধ খেতে খেতে অভ্যস্ত তাই বেশি অজ্ঞান হয়নি। ডাকাত দল তাদের উপর হামলা করেছে! থার্ড ফ্লোরের একজন মারা গেছে! শুরুতেই বলে রাখি ভয় পেয়ো না তোমাদের বাসার সবাই সুস্থ। সুস্থ বলতে সবাই তোমার মতো জ্ঞানহীন। তুমি হয়তো মাঝে মাঝে ঘুমের ঔষধ খাও যে কারণে তোমার অভ্যাস হয়ে গেছে।"
"হ্যা। প্রায় সময় আমি ঘুমের ঔষধ খাই। তবে রাতে গরমের কারণে পানি বেশি খেয়েছি। গন্ডগোলটা ট্যাঙ্কের পানিতে তোমরা সন্দেহ করলেও আমি বাজি ধরে বলতে পারি! যাই হোক বাকিদের অবস্থা কি?"
"ডাকাতের কোপাকুপির আঘাতে একজনের হাত কেঁটে গেছে। একজনের দুটি আঙুল কেঁটে গেছে। একজনের ঘাড়ে আঘাত করতে চেয়েছিলো কিন্তু কানে আঘাত লেগেছে।"
.
এতো বিশাল হত্যাযজ্ঞ কেনো করা হলো রিহান কিছুই বুঝতে পারে না। চিন্তা করে কাজ নেই। শরীর এখনও দূর্বল। আবার ঘুমিয়ে পড়বে। কিন্তু ঘুমায় না। সজিবের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে তার মোবাইল কোথায়? সজিব হেসে বলে, "পুরো বিল্ডিং ডাকাতি হবে আর তোমার মোবাইল তোমার কাছে থাকবে ডাকাতদের এতো বোকা ভেবেছো?"
"সজিব ভাইয়া তুমি কি তোমার মোবাইলটা আমাকে দেবে কিছুক্ষণের জন্য?"
"ফোন অবশ্যই দেবো। তবে আমার ফোন দেবো না! তোমার ফোন কয়টা বলোতো?"
"দুইটা! কিন্তু একটাতো আজমলের কাছে! আমার বন্ধু! ও ফোন দিয়ে গেছে?"
"ঠিকই ধরেছো।"
রিহান বলে, "জানো ভাইয়া! ডাকাত কিন্তু আমার ফোন না নিয়ে বোকামি করতো না, বরং ফোন নিয়ে বোকামে করেছে!"
"আমি জানি তুমি কি বলতে চাও! তুমি বলবে তুমি এখন তোমার ফোন গুগল ট্রাক করে খুজে বের করবে? কিন্তু রিহান তা অসম্ভব! যে ডাকাত পুরো ফ্লাট ডাকাতি করার মতো চালাক, সে এতোক্ষণে তোমার ফোন শিওর ফ্লাশ মেরেছে!"
রিহান হাসে। এবং বলে, "কিন্তু ভাইয়া,, ডাকাত দল আমার ফোনের সফটওয়্যার চেঞ্জ করলেও হার্ডওয়্যার চেঞ্জ করেনি! আমি আমার ফোন খুলে ভিতরে একটি একস্ট্রা ট্রাকিং ডিভাইস সেট করে রেখেছি, সেটা ডাকাত দল জানে না!"
সজিব এতো সূক্ষ্ণ কাজে অবাক না হয়ে পারে না!
.
.
রিহান সাথে সাথে তার ফোন থেকে ট্রাক করে ফেলে তার ফোন কোথায় আছে! সজিবকে বলে তাদের বিল্ডিংয়ের কেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে ডাকতে। পুলিশ অফিসার রহিম সাহেব আসেন। রিহান তাকে সবকিছু বলে। সাথে সাথে ঐ স্থানে ছুটে যান রহিম সাহেব। ২ ঘন্টা পর পানসে মুখে ফিরে আসেন এবং বলেন, "এই নাও রিহান তোমার ফোন"
রিহান খুশিতে লাফিয়ে ওঠে! "পাওয়া গেছে? ডাকাত দলকে ধরা গেছে?"
"বিষয়টা অতো সহজ নয় রিহান।"
"কেনো?"
"যে দোকানে তোমার ফোনটা পেয়েছি, সেখানে শুধু তোমার ফোনটাই আছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে একজন বোরকা পরা মহিলা ফোনটি বিক্রি করে গিয়েছে। কিন্তু শুধু এই একটি ফোনই বিক্রি করছে। আর কিছু ঐখানে বিক্রি করিনি।"
"স্যার আমি খুব দুঃখিত!"
"তোমার খুশি হওয়া উচিৎ রিহান। তুমি ডাকাত যদিও ধরতে পারোনি, কিন্তু তোমার নিজের ফোন নিজেই খুজে পেয়েছো, এজন্য তোমাকে আমি কতোটুকু সম্মান জানানো দরকার, আমি নিজেই বুঝি না!"
রিহান মুচকি হেসে বলে, "আপনারা যদি চান, আপনাদের সাথে আমিওকি আমাদের বিল্ডিংয়ের কেসটা ইনভেস্টিগেট করতে পারবো?"
রহিম সাহেব বলেন, "তুমি নিজের ফোন যেভাবে খুজে বেড় করলে, তাতেই আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। দ্বিতীয়ত আমরা জেনেছি তুমি বর্তমানে রসায়নে অনার্সের পাশাপাশি এল.এল.বি করা চালাচ্ছ। সে হিসেবে তোমাকে অবশ্যই ইনভেস্টিগেশন করার সুযোগ দেয়া হবে।"
"দেখুন স্যার, আমাদের বিল্ডিংয়ের সবাই ঘুমানো। দারোয়ানকি ঘুমানো ছিলো?"
সজিব কথার মাঝে বললো, "দারোয়ানের শরীরে অধিক পরিমাণ অ্যামিট্রিপটিনিল হাইড্রোক্লোরাইড পাওয়া গিয়েছে। তিনি এখনও অচেতন।"
রিহান বলে, "দারোয়ানকে সন্দেহ করে লাভ নেই। কারণ ছাদের দরজার তালার চাবি থাকে শুধু আমার কাছে। আমি ছাড়া অন্য কেউ ছাদে যাওয়া সম্ভব না! যদি কেউ মানুতে ঔষধ মেশায়, তাহলে সে আমি!"
রহিম সাহেব বলেন, "আমরাও এখনও ইনভেস্টিগেট করতে ছাদে যেতে পারিনি। তুমি চাবিটা কোথায় রেখেছো বললে আমরা যেতে পারতাম। তবে ট্যাঙ্কের পানিতে ঔষধ মেশানো হয়েছে সেটি ফরেন্সিক ডিপার্টমেন্ট থেকে টেস্ট করে ১২ টার সময় জানা গিয়েছে।"
রিহান বলে, "স্যার আমাকে একটু রিপোর্টটা দেখাবেন?"
রহিম সাহেব তার অ্যাসিস্ট্যান্টকে ডেকে গাড়ি থেকে রিপোর্টটি আনালেন। রিহান রিপোর্টটি দেখতে থাকলো মাঝে মাঝে ক্যালকুলেটর দিয়ে অল্প কিছু হিসাব করলো।
এরপর বললো, "আমাদের ট্যাঙ্কটি ২ মিটার চওড়া, ৪ মিটার লম্বা, ২ মিটার উঁচু। অর্থাৎ আয়তন ১৬ ঘণমিটার। এখানে পানি থাকে ১৬ হাজার লিটার। ট্যাঙ্ক অধিকাংশ টাইম পানি ভর্তি থাকে। ১ ফুট পানি কমলেই অটোমেটিক পাম্প চালু হয়। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে পানিতে অ্যামিট্রিপটিলিন হইড্রোক্লোরাইডের ঘনত্ব 0.06 %ww অর্থাৎ প্রতি ১ লিটার পানিতে ৬০০ মিলিগ্রাম অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইড! পুরো ট্যাঙ্কের ১৬০০০ লিটার পানিতে তাহলে অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইডের পরিমাণ ৯.৬ কেজি! দাম প্রায় ৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা!!! অনেক বড়লোক ডাকাততো!"
সজিব বললো, "পুরো বিল্ডিংয়ের ১২ টি ফ্লাট ডাকাতি করেছে। তা থেকে যে পরিমাণ টাকা পেয়েছে, তাতে মাত্র সর্বোচ্চ ৭ লাখ টাকা কিছুই না।"
এর মধ্যে আরেকজন নার্স এসে পুলিশ অফিসারকে ডেকে অন্য একটি কেবিনে নিয় গেলো। কিছুক্ষণ পর রহিম সাহেব রিহানের কাছে ফিরে এসে বললেন, "রিহান! অবস্থা গুরুতর!"
"কি হয়েছে?"
"ডাকাতি কোনো ডাকাত করেনি! অন্য কোনো ঘাপলা আছে!"
"কেনো?"
"তোমাদের থার্ড ফ্লোরের মনির সাহেবকে চেনো?"
"চিনবো না কেনো? তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক।"
"তিনি মারা গিয়েছেন! তাকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। শুধু এই একজনকেই খুন করা হয়েছে।"
রিহান কিছু বলতে পারে না নিশ্চুপ হয়ে যায়। অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর।
রহিম সাহেব বলতে থাকেন, "কিন্তু প্রবলেম ভিন্ন! তার স্ত্রী বললেন ডাকাত দল নাকি রহিম সাহেবের হাত থেকে কি একটা বোতল ছিনিয়ে নিচ্ছিলেন। সেই বোতলটা দিবেন না জন্য তাকে গুলে করেছে।"
"ও মাই গড! স্যার এটা কোনো ডাকাতি নয়! আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি পুরো নাটকটি শুধু ঐ বোতলটির জন্য! কারণ ঐ বোতলটিতে আছে প্লাজমা! স্যার নিজে তৈরী করেছেন! প্লাজমা হলো বায়বীয় পদার্থের আয়নিক অবস্থা। এটা দিয়ে হাইড্রোজেন বোমার চেয়েও শক্তিসালী বোমা তৈরী করা যাবে। এটার দামের সামনে ৭ লাখ টাকার অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইড কিছুই না! কারণ এই প্লাজমা কয়েক বিলিয়ন টাকায় বিক্রি করা যাবে!"
রহিম সাহেব কিছু ভেবে পান না। তিনি বলেন, "এখন কিভাবে কি করবো আমি বুঝতে পারছি না! কিভাবে খুজে বের করবো এদের? বিষয়টা দেখতেছি ডিবি অথবা র্যাবের আন্ডারে নেয়া দরকার!"
কুটনীতিকদের মতো চোখ মুখ বাঁকা হাসি দিয়ে রিহান বললো, "কিছু দরকার নেই। আমরাই খুজে বের করবো! উপায় আছে!"
"কি?"
"স্যার আমাদের ট্যাঙ্কের উপর কোনো ছাদ নেই। সুতরাং ওরা ঔষধ উপর থেকে ছেড়েছে। উপর থেকে ছাড়লে অবশ্যই ড্রোন দিয়ে ছাড়বে। যদি ড্রোন দিয়ে ছাড়ে, তাহলে আমি আমার ওয়াইফাই রাউটারে অবশ্যই সংকেত পাবো। ঐদিন আমার রাউটারে যতোগুলো কানেকশান পেয়েছে, সবগুলি চেক করার পর যেটায় কোনো ফোন বা ল্যাপটপ পাবো না, ঐটাই ডাকাত দলের বোঝা যাবে! তারপর আমরা সেই আইএসও কোড ট্রাক করবো। সেখানে অবশ্যই আমাকে আপনি সাহায্য করবেন। কারণ আইনের কর্মী ব্যাতিতো এমন ট্রাক কেউ করতে পারে না।"
"তুমি ভুল গেছো তুমিও একজন আইনের ছাত্র! কিন্তু কথা হলো, প্রায় ১০ কেজি ঔষধ ড্রোনে করে কিভাবে তুলবে?"
"সেটাও কঠিন বিষয়। যাই হোক আমরা চেষ্টা করে দেখি!"
রহিম সাহেব তার গাড়ি থেকে সরকারি অনুমতি দেয়া লিনাক্স ভার্সনের ল্যাপটপ নিয়ে আসেন। রিহান কাজে নেমে পরে। সেদিন সারাদিনে মোট ১০ টি সিগন্যাল পেয়েছিলো। চারটি তার বাসার মা বাবা ভাই এবং তার নিজের ফোন। ১ টি তার নিচ তলার বন্ধুর ফোন। ১ টি মনির স্যারের। বাঁকি চারটি একটু ভিন্ন! মুখে ষড়যন্ত্রকারীর মতো কুটনৈতিক হাসি দিয়ে রিহান বলে পেয়ে গেছি! লোকেশন ট্রাক করা হলো। চারটি একই লোকেশনে আছে। যেহেতু বিজ্ঞানী মহল, তাই র্যাব কর্মীদের নিয়ে যেতে হলো সেখানে। চারজনকে গ্রেফতার করা হলো। এরপর তারা নিজের মুখে দোষ যেমন স্বীকার করলো, তা সাধারন মানুষের কাছে অকল্পনীয় কিন্তু বিজ্ঞানের ছাত্রদের নিকট সাভাবিক বিষয়।
তারা বললো,
"হ্যা আমরা ঐ প্লাজমার জন্যই গিয়েছিলাম। মানুষ যেনো এতোদূর সন্দেহ করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি ঘরে ডাকাতি করেছি। আমরা এটুকও নজর রেখেছি ছাদের চাবি যেহেতু রিহানের কাছে থাকে। তাই আমরা ভেবেছি দোষ তার ঘাড়ে পড়বে। কিন্তু বেটা নিজেই আশল চক্রান্তকারীদের ধরে ফেলবে আমরা বুঝতে পারিনি! বুঝতে পারলে ওকেও মনিরের মতো মেরে ফেলতাম! আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম রিহান হুবহু মনিরের মতো বদমাইস!"
রিহান বললো, "১০ কেজি অ্যামিট্রিপটিলিন হাইড্রোক্লোরাইড কিভাবে ড্রোন দিয়ে তুললে?"
"আমরা কোনো ড্রোন ব্যবহার করিনি। প্রথমত ড্রোন দেখলে সবাই সন্দেহ করতো। দ্বিতীয়তো ড্রোন দ্বারা এতো ওজন তোলা অসম্ভব। আমরা চারটা পাখির মাথায় মাইক্রো ট্রান্সকিনিওয়াল ইন্টারফেস ব্যাবহার করে পাখিগুলোকে ড্রোনের মতো কাজ করিয়েছি। আমাদের কাজ শেষ করার পর শুধু মাইক্রো ট্রান্সকিনিওয়াল ইন্টারফেস মেশিনটি রেখে পাখিগুলো ছেড়ে দিয়েছি।"
"কোন পাখি? কবুতর?"
"না! কবুতর ২.৫ কেজি ওজন তোলার মতো শক্তিশালী নয়?"
"তাহলে?"
ভিয়েতনামের ফ্লোরিকান পাখি....
.
(সমাপ্ত)
(বানান চেক করার সময় পাইনি)
0 Comments