আল্লাহ তায়ালা বলেন,
أ فتؤمنون ببعض الكتاب
و تكفرون ببعض فما جزاء من يفعل ذلك منكم إلا خزى فى الحياة الدنيا و يوم القيامة يوآدون إلى أشد العذاب
অর্থ: তোমরাকি এই কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করো এবং বাঁকি অংশ অস্বীকার করে? তোমাদের মধ্যে (মুমিনদের মধ্যে) যে ব্যাক্তি এমন কাজ করবে, তার জন্য পার্থিব জীবনে অশান্তি ব্যাতিতো আর কিছু থাকবে না। এবং আখিরাতে ফিরে যাবে সর্বোচ্চ আজাবের দিকে। [সূরা বাকারা : ৮৫]
.
আয়াতটিতে কিছু সূক্ষ্ণ পয়েন্ট রয়েছে!
.
যেমন- সূরা বাকারার ৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন কাফেরদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি! আর এই আয়াতে মুনাফিকদের (যারা কিছু আয়াত মানে, কিছু আয়াত মানে না, কিন্তু সকল আয়াত মানর না তাদের) সম্পর্কে বললেন, ফিরে যাবে সর্বোচ্চ আজাবের দিকে! বোঝা গেলো, যারা কিছু আয়াত মানে, কিছু আয়াত মানে না, তারা কাফেরদের চেয়েও বড় পাপিষ্ঠ!
.
অনেকের ধারণা, আমি কালেমা পড়লেই মুসলমান হয়ে যাবো! কোরআনের হুকুম মানি আর না মানি! এরা ভ্রান্তির মাঝে আছে যা উপরের আয়াত দ্বারাই বোঝা যায়। এরাতো মুমিন নয়ই, বরং সাধারণ কাফেরদের চেয়েও বেশী পাপিষ্ট! (নাউজুবিল্লাহ)
.
কোরআনের কতো বিধান সমাজের মানুষ অবিশ্বাস করে, তার কিছু উদাহরণ নিম্নে দেয়া হলো—
.
১. মেয়েদের পর্দা :— মেয়েরা স্বামী, বাবা-দাদা-নানা (এবং এমন উধ্বর্তন), শ্বশুর-দাদা শ্বশুর (এবং এমন উধ্বর্তন), ছেলে-নাতি (এবং এমন অধ্বস্তন), সৎ ছেলে-সৎ নাতি (এবং এমন অধ্বস্তন), সহোদর অথবা বৈমাত্রেয় অথা বৈপিত্রীয় ভাই (তদ্রুপ চাচা-মামা), ভাইয়ের ছেলে-বোনের ছেলে (এবং এমন অধ্বস্তন), এবং যেকোনো মহিলা, এবং দাস দাসী (যুদ্ধ বন্দী দাস দাসী), যৌন কামনা মুক্ত পুরুষ (১০০+ বয়স) এবং ছোট বাচ্চারা যারা যৌনতা বিষয়ে জানে না —এরা ব্যাতিতো অন্য সকলের সামনে সাধারণ অবস্থায় সাভাবিক প্রকাশ্যমান সৌন্দর্য (যেমন বোরকা বা চাঁদরের নকশা) ব্যাতিতো বাঁকি সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা ফরজ। [সূরা নূর— ৩১]
.
এটা কোরআনের আয়াত। এখানে দেবর, দুলাভাই, খালু, ফুপা ইত্যাদি আত্নীদের নাম উল্লেখ নেই! সুতরাং এদের সামনে পর্দা করা ফরজ! কিন্তু সমাজের সাধারণ মানুষ এ বিষয় পাত্তা দেই না! আমরা ভাবি খালু, ফুপা, দেবর, দুলাভাইয়ের সাথে পর্দা নেই! (নাউজুবিল্লাহ) এমন ভাবা কোরআন বিরোধী।
.
.
২. পুরুষ চোর এবং মহিলা চোর, উভয়ের হাত কেঁটে দিতে কোরআনে আদেশ দেয়া হয়েছে। [সূরা মায়িদা— ৩৮]
.
আমাদের দেশের দন্ডবিধির ৩৭৯ ধারা অনুসারে, চোরের শাস্তি সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদন্ড! এমন আইন কোরআন বিরোধী।
.
.
৩. অবিবাহিত জিনাকারী পুরুষ এবং মহিলার শাস্তি ১০০ চাবুকাঘাত। [সূরা নূর : ২]
.
অথচ আমাদের দেশের দন্ডবিধির ৩৭৬ ধারা অনুসারে শাস্তি যাবজীবন কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড! তাও আবার সেচ্ছায় করলে কোনো শাস্তিই নেই!
.
.
৫. যারা আল্লাহর আইন ব্যাতিতো অন্য আইনে বিচার করে, তারা কাফের। [সূরা মায়িদা— ৪৪]
.
সুতরাং উপরের আইনগুলোর বিরুদ্ধে যারা আইন পাশ করবে, তারাও কাফের।
অথচ আমরা এমন আইন পাশ করা কোনো পাপই মনে করি না! এটাও কোরআন বিরোধী কাজ।
.
.
৬. যারা আল্লাহকে এবং আখিরাতকে ভয় করে, এবং বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য আল্লাহর রসূল হযরত মুহাম্মদ স. এর মাঝেই ছিলো উত্তম আদর্শ। [সূরা আহযাব— ২১]
.
নবিজী স. টুপি পরেছেন, লম্বা জামা পরেছেন, আমরা অনেকে এমন পোশাক ভালো মনে করি না! নবিজী স. লুঙ্গি পরেছেন। আর আমরা লুঙ্গি পরা ঘৃণা করি, গড়িব ভাবি! এ জাতীয় নবিজী স. এর যেকোনো কাজ ঘৃণা করা, অথবা ক্ষতিকর মনে করা কোরআন বিরোধী।
.
.
উপরের আকায়েদ (বিশ্বাস সমূহ) সহ কোরআনের যেকোনো আয়াতের হুকুম যারা বিরোধীতা বা হাসি ঠাট্টা বা এর বিপরীত মত প্রকাশ করবে, তারা কেউ মুসলমান নয়। এরা কাফেরের চেয়েও নিকৃষ্ট। আল্লাহ আমাদের সকলকে খাঁটি মুমিন হয়ে ইমানের সাতে মৃত্যুবরণ করার তউফিক দান করুক।
0 Comments