হমিচিডিউম হরেনডাম
- মোঃ তানজিল হোসাইন (আকাশ)
ছাত্র, ইলেকট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলোজি [বিইউবিটি], ঢাকা; নেভাল আর্কিটেকচার এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিয় বিইাগ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; ডিপ্লোমা ইন শিপবিল্ডিং টেকনোলজি বিভাগ, ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, ফরিদপুর; ফাজিলাত বিভাগ [মিশকাত], জামি‘আ ইসলামিয়া মাহমুদিয়া [মাদরাসা], বরিশাল। পরিচালক ও সভাপতি, “ইসলামিকা এট পিয়া লেগাটোরম কোয়েটস” পরিচালক, “রিভার ট্রান্সপোর্ট বাংলাদেশ” সত্বাধীকারী, তানজিল মিডিয়া।


কিবের লাশের গলায় থাইরয়েড গ্রন্থি বরাবর প্রায় ১ ইঞ্চি ব্যাসের একটি ছিদ্র। কোনো রক্ত নেই, কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই! মনে হয় যেনো কেউ একটি ডামি (পুতুল) তৈরী করে এমন বিকৃত ডিজাইন করে রেখেছে!

পোস্ট মর্টেমের জন্য পাঠানো হলো লাশটি। ডাঃ ডিও ডি কস্তা ময়নাতন্দের রিপোর্ট লিখেছে-
1. NO BLOOD PARTICLE IN HIS WHOLE BODY
2. ANY TOURTURUL SIGN SHOULD NOT BE NOTED WITHOUT A WHOLE (approximately 2.5 mm) OVER LARYNUS EXAURIRE BUT THERE HAS NOT ANY SIGN OF TORTURE OR TRAUMA OR FACTURE OR BURN
3. HOW HE WAS DEATH COULD NOT BE RECOGNISED BUT WE THOUGHT HE WAS DETH BY ANEMIA.

অর্থাৎ, তার পুরো শরীরে কোনো রক্ত নেই! শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন খুজে পাওয়া যায়নি শুধুমাত্র কন্ঠনালীর উপর একটি আনুমানিক ২.৫ মি.মি. ব্যাসের গর্ত আছে কিন্তু এই গর্তে কোনো আঘাত বা পোঁড়া চিহ্ন নেই! কিভাবে মৃত্যু হয়েছে আমরা জানি না তবে আমাদের ধারণা রক্তশূণ্যতার কারণে মৃত্যু হয়েছে!


ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে নিয়ে ইনসপেক্টার ওয়াজেদ হিমশিম খাচ্ছে, এমন হত্যাকান্ড সে কখনও দেখেনি। তার ধারণা ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কোনো গোলমাল আছে অথবা এটা জ্বীনের কাজ! এই ভেবে সে কেস ক্লোজড করে দিলো। এমন সময়ে ফোন আশে পশ্চিম চারাবাগ দিঘির পাড়ে একটি লাশ পাওয়া গেছে। ছুটে যায় ইন্সপেক্টার ওয়াজেদ সেখানে।

এই লাশটির শুধু নাভিতে তেমনই একটি গর্ত, আর কোনো রক্ত বা আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় আকিবের মতোই এর শরীরেও কোনো রক্ত ছিলো না, গর্ত ব্যাতিতো কোনো আঘাতে চিহ্ন নেই, এবং লাশটির পেটে ইলিয়াম এবং ক্লোন নেই! (অর্থাৎ নারি নেই কিন্তু পাকস্থলী, লিভার, অগ্নাশয়, কিডনি, মুত্রথলি সব আছে)

পরেরদিন সকালে আরেকটি ছেলের লাশের বুক বরাবর ছিদ্র, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে, লাশটির হৃৎপিন্ড নেই এবং আগের লাশ দুটোর মতোই শরীরে কোনো রক্ত নেই। এই লাশে একটি আজিব বিষয় ঘটে, ছেলেটির যৌনাঙ্গ এবং অন্ডোকোষ পুরোপুরি পেটের মধ্যে ঢুকানো! যার ফলে সাধারণ দেখায় মনে হয় এটি কোনো মেয়ের লাশ(!)

প্রথম দুইটি লাশের সাথে কোনো ধস্তাধস্তি হয়নি, কিন্তু এই ছেলেটির সাথে ধস্তাধস্তি হয়েছে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমাট হওয়ার চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।

এলাকায় হটাৎ এমন বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে, এই অবস্থার সমাধানের জন্য উপর মহলে আবেদন করে ফ্যাক্স পাঠায় ওয়াজেদ। অতঃপর ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম গঠন করা হয় এবং লাশগুলোকে আবারও পোস্টমর্টেম করা হয়। রিপোর্টে কোনো পার্থক্য পাওয়া যায় না।

পুরো সাভার উপজেলায় রেড এলার্ট এবং কার্ফিউ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু অবুঝ বাঙালি, কার্ফিউতেও ঘর দেখে বেড় হয়! তদন্ত টিম লক্ষ্য করে, যারা ঘর থেকে বের হয় তারাই খুন হয়। পুরো এলাকা রেড এলার্ট তাই বাহির থেকে কোনো মানুষ আসাও সম্ভব নয়। সুতরাং এইএলাকার অভ্যান্তরিন কেউ কাজগুলো করছে বলে ধারণা হয় তদন্ত টিমের। অবস্থা কন্ট্রোলে আনার জন্য সাভার এলাকার যারা হোটেল, ম্যাচ এবং ভাড়াটিয়া অস্থায়ী বাসিন্দা, তাদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য এলাকা থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে জনসংখ্যা প্রায় ৭০% কমে গেলো।

কিন্তু এখনও খুন বন্ধ হয় না, গতো ১ সপ্তাহয় খুন হলো ১৩ জন। পুরো দেশ শোকে স্তব্ধ। এমন সময় তদন্ত টিমের সেক্রেটারি জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত পরামর্শ দেয়, “যারা ঘর থেকে বের হয়, তারা খুন হয়, কিন্তু আমাদের এমন কাউকে ফলো করতে হবে, যে ঘর থেকে বের হয় কিন্তু খুন হয় না! তাহলেই আমরা খুনিকে ধরতে পারবো!” পরামর্শটি পছন্দ হয় তদন্ত টিমের সকলের। কিন্তু এমন সময়ে তদন্ট টিমের চিফ জেনারেল সমন্ত সেনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয় একটি বিষয় চিন্তা করে!!! সে চিৎকার করে বলে ওঠে, “আর খোজাখুজি করা লাগবে না, খুনিকে আমরা পেয়ে গেছি! তবে সে খুনি তা পরীক্ষা করার জন্য একটি কাজ করতে হবে! আমরা ৫ জন আগামী তিনদিন এই রেস্ট হাউজেই থাকবো এবং একসাথেই থাকবো কখনও আলাদা হবো না!”

বিষয়টি শোনার সাথে সাথে তদন্ত টিমের চিফ অফ ফিজিক্স তরফদার পিস্তল বের করে হত্যা করে ফেলে তদন্ত টিমের চার সদস্যকে এবং নিজেও মাথায় গুলি করে আত্নহত্যা করে...........



মোটিভ: তরফদারই ছিলো এই খুনি। জেনারেল সমন্ত সেনের সনাদেহের কারণ তারা যখন তদন্তের কাজে বের হয়, তার কিছুক্ষণ আগেই তরফদার গায়েব হয়ে যায় এবং ঐ টাইমেই খুনগুলো হয়।

খুনের কারণ: যাদেরকে খুন করা হয়েছিলো তারা প্রত্যেকে তরফদারের স্ত্রীর সাথে পরোকিয়া করতো! এই রাগে তরফদার তাদেরকে হত্যা করে।

খুনের পদ্ধতি: এক ইঞ্চি ব্যাসের একটি SS পাইপের ধারালো অংশ দিয়ে গলা, নাভি, বুক ইত্যাদি ছিদ্র করা হয়। এরপর সেই ছিদ্রে ডেন্টা-টি লিপোফসফেট প্রবেশ করালে শরীরের সব রক্ত শুষে পানি হয়ে বাহিরে চলে আসে। এর ফলে রক্তশুণ্যতায় প্রত্যেকে মারা যায়। দ্বিতীয় লাশটির নারিভুরি বের করা হয়েছিলো কারণনডেন্টা-টি লিপোফসফেটের প্রভাবে নারিভুরি গলে পঁচে যায়। ডেন্টা-টি লিপো ফসফেটের কোনো প্রুভ যেনো শরীরে না থাকে তাই ছিদ্র করার পর প্রথমেই নারিভুরি বের করে ফেলে। তৃতীয় লাশটির যৌনাঙ্ক বিকৃত করা হয় কারণ তাকে তরফদারের স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত অবস্থায় তরফদার দেখে ফেলেছিলো। তরফদারের স্ত্রী অন্ধ, বোবা, বয়রা, তাই সে কিছুই জানে না।

(সমাপ্ত)